প্রকাশিত: ০৭/০২/২০১৭ ৯:১৭ এএম , আপডেট: ০৭/০২/২০১৭ ৯:১৮ এএম

নিউজ ডেক্স:

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর শহরের জনবহুল এলাকা কোতারায়া। বাংলাদেশি নাগরিকসমৃদ্ধ এলাকাটির নামও বদলে গিয়ে হয়েছে বাংলা মার্কেট। হাতে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের সিমকার্ড নিয়ে ফেরি করছেন যশোরের অভয়নগরের নাজমুল খন্দকার। চেহারা বলছে, কোনো এক সময় আলালের ঘরের দুলাল ছিলেন। ক্লান্তি আর হতাশায় এখন বিবর্ণ তার মুখাবয়ব। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে নিজেকে লুকোতে চাইলেন। অনেক অনুরোধ ও জোরাজুরির একপর্যায়ে জানালেন নিজের কষ্টগাথা। বললেন, ২০১৪ সালে ছাত্রভিসায় মালয়েশিয়া আসেন। ৪ লাখ টাকা খরচ করে এসে অর্ধেক টাকাও তুলতে পারেননি। কেলাং এলাকায় তার সঙ্গে আছেন ৩ জন, তারাও আসেন ওই ছাত্রভিসায়।

ভ্রমণ ও ছাত্রভিসার আড়ালে এ ধরনের মানবপাচার ঠেকাতে সন্দেহভাজন ট্রাভেল ও রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মকা- খতিয়ে দেখছে সরকার। এ ব্যাপারে সহায়তার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এমন অভিযোগে ২ শতাধিক ট্রাভেল এজেন্সিকে নজরদারির আওতায় আনার খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পুরনো পল্টন এলাকার একটি ট্রাভেল এজেন্সি যশোরের নাজমুলের ভিসার কাগজপত্র তৈরিতে সহায়তা করে। এই এজেন্সি ইরাক ও মালয়েশিয়ায় ভ্রমণ ও ছাত্রভিসা প্রক্রিয়ায় ক্ষমতাপ্রাপ্ত কিনা তাৎক্ষণিকভাবে সে তথ্য জানাতে পারেনি মন্ত্রণালয়, অভিযোগ পাওয়ায় তদন্ত চলছে।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) কর্মকর্তারা ওই ট্রাভেল এজেন্সি সম্পর্কে মুখ না খুললেও বলেছেন, আটাবের কোনো সদস্য এই ধরনের অনৈতিক কাজে জড়িত হতে পারে না। কেননা আমাদের গঠণতন্ত্রেই কঠোর শান্তির বিধান রয়েছে।

আটাব কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রায় ২ হাজার এজেন্সি আটাবের সদস্য। অথচ রাজধানীর অলিতে-গলিতে অনেকেই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে ব্যবসা করছে। এদের দায় আটাব নিতে পারে না।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভ্রমণ ও ছাত্রভিসার নামে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক গমনের হার সম্প্রতি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এভাবে যারা যাবে, তাদের চাকরির নিশ্চয়তাও দেওয়া হচ্ছে। ফলে প্রতিদিনই কয়েকশ বাংলাদেশি ভ্রমণভিসায় গিয়ে কাজের জন্য থেকে যাচ্ছেন। একইভাবে ধর্মীয় স্থান দর্শনের কথা বলে ইরাক যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভিজিল্যান্স/টাস্কফোর্স শাখাসূত্র জানায়, পুলিশের বিশেষ শাখার (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) মাধ্যমে ইতোমধ্যেই সন্দেহভাজন বৈদেশিক শিক্ষা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান, রিক্রুটিং ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর নামের তালিকা হাতে পাওয়া গেছে। অহেতুক কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। শিগগির শুরু হবে সাঁড়াশি অভিযান। টাস্কফোর্সে প্রবাসীকল্যাণ, পররাষ্ট্র, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি), পুলিশের বিশেষ শাখা, র‌্যাব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

সূত্র জানায়, যেসব রিক্রুটিং/ট্রাভেল এজেন্সি ও বৈদেশিক শিক্ষা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত এমন ২ শতাধিক প্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হাতে পেয়েছে মন্ত্রণালয়। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পাঁচ বছরের কর্মকা- পর্যালোচনা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেখা হয়েছে বিএমইটিতে দাখিল করা অভিযোগের ধরন। আমাদের সময়

পাঠকের মতামত

কঠোর নির্দেশনার পরও মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা ছাড়ছে না ভোটের মাঠ

সরকারদলীয় এমপি-মন্ত্রীদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিতে কঠোর নির্দেশনা ...

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীদের নিতে জাহাজ আসবে এ সপ্তাহেই

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের ফের ...